Header Ads

একটু স্পেস ❤



নদীর এপাড় কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস, ওপাড়েতে সর্ব সুখ আমার বিশ্বাস,” ওপাড়ের সুখ নিয়েই আমাদের যত ব্যথা, এপাড়ের সুখ কুড়ানোর কথা ভেবেও দেখা হয় না! অথচ নিজেদের ভাবনা আর ইচ্ছাগুলোকে একটু অন্যভাবে দেখলেই আমাদের জীবনটা আরেকটু সুখের, আরেকটু আনন্দের হয়ে উঠতে পারে!
Image result for “আমার মতন সুখী কে আছেসংসারে বাস করি আমরা চারটে মানুষ। আমি, আমার কর্তা, আর আমাদের অতি আদরের পুত্র ও কন্যা! আমরা দুজনেই কর্মজীবী হওয়ায় বেশ ব্যস্তই থাকি, পাশাপাশি ছেলেমেয়েরও সারাদিন স্কুল, কোচিং, প্রাইভেট এগুলো নিয়ে থাকে ব্যস্ততা। সারাদিন শুধুই ছোটা, যেন কারুর কোনো সময় নেই অন্যকে দেবার! দিনশেষে, মাস শেষে সংসারের লাভ ক্ষতির হিসাব, ছেলে মেয়ের পাঠোন্নতির হিসাব শুধু এসব হিসাবেই অতিবাহিত হয়ে যায় দিনগুলো। তাই এসব কিছু থেকে ছুটি নেবার অভিপ্রায়ে কর্তা প্রায় প্রতি বছরই আমাদের নিয়ে যান বেড়াতে। খুব ভালো লাগে এই দিন ক'টা! নেই কোনো রান্না বা মেনু করা, নেই বাচ্চাদের কোচিং, কর্তার অফিস, নিজের কর্মস্থলের চাপ কিচ্ছু নেই। যেন বুক ভরে নিতে পারি অনেকটা মুক্ত বায়ু। সংসারের চারদেয়ালে থাকা কর্মব্যস্ত মানুষগুলোকে খুব কাছ থেকে দেখবার সুযোগ পাই। চারজনের না বলা কত গল্প, অভিমান, অভিযোগ সব কিছুই শেয়ার করতে পারি অবলীলায়। নিজের ছেলেমানুষিগুলোও তখন কোনো নিয়ম মেনে চলে না। তারপর ফেরা, আবার সেই সংসার, সেই ছোটাছুটি, সেই ব্যস্ততা, এতোকিছুর পরেও সেখানে ফেরার তাগিদ অনুভব করা।
প্রতিটা জীবনেই এই বিরতিটুকুর খুব প্রয়োজন আছে, কর্মব্যস্ত আমরা কর্মের দোহাই দিয়ে নিজেদের একটু স্পেস দেই না। নিজেদের একেবারেই একান্তে কাটানো সময়টুকুর খুব প্রয়োজন, একটু স্পেসই জীবনের সাদাকালো অংশগুলোতে দিতে পারে রঙের ছোঁয়া, জাগাতে পারে সুপ্ত মনটাকে, পরিবারের বন্ডিংটাকে করতে পারে সুদৃঢ়।

তাই ওপাড়ের সুখ নিয়ে আক্ষেপ না করে বরং রবীন্দ্রনাথের সুরে যেন আমরা প্রত্যেকে বলতে পারি, “আমার মতন সুখী কে আছে, আয় সখী আয় আমার কাছে, সুখী হৃদয়ের সুখের গান, শুনিয়া তোদের জুড়াবে প্রাণ!”

No comments