অনেক দিন রাশেদ পাখি দেখেনি
অনেক দিন রাশেদ পাখি দেখেনি, দেখার কথা ভাবেও নি; কিন্তু ছোট একমুঠো পাখিটার বুকে শাদারঙ দেখে বুকে কাঁপন বোধ করলো রাশেদ।এটা নিশ্চয়ই দোয়েল,সে ভাবলো।দোয়েলটির জন্যে এখানে একটা আমগাছ থাকা উচিত ছিল,তাতে সবুজ পাতা থাকা উচিত ছিলো; কিন্তু নেই,দোয়েল দেয়ালের ভাঙ্গা ইটের ওপর বসে আছে।দোয়েলটির জন্যে আমগাছ নেই,এটা বেশ স্বাভাবিক; দোয়েলটির তো থাকার কথা নয় এখানে।তবু সে এখানে কোনো? এই শহরে কেনো? রাশেদ দেয়ালটির আরেকটুকু কাছে আসতেই দোয়েল উড়ে একটু দূরে সরে গিয়ে আবার বসলো,হয়তো বসতো না,বসেছে ভালভাবে উড়তে পারছে না বলে।ওর ডানাটি কি ভাঙ্গা,কয়েকটা পালক খসে গেছে ডানা থেকে?রাশেদ আবার এগোতেই আবার উড়তে চেষ্টা করলো দোয়াল, রাশেদ দেখলো খুব কষ্ট হচ্ছে তার উড়তে।
তার দিকে তাকিয়ে আছে দোয়েল, তবে দোয়েলের চোখ অতোটা দূর থেকে রাশেদ দেখতে পাচ্ছে না; এটা যদি তার ছেলেবেলা হতো তাহলে হয়তো দোয়ালের চোখ দেখতে পেতো,ওই চোখে কিসের ছায়া পড়েছে,তাও হয়তো দেখতে পেত।দোয়েল নিশ্চয়ই দেখছে রাশেদকে,এবং দূরে দাড়ানো ট্রাকটিকে।দোয়েল কি বুঝতে পারছে রাশেদের সাথে ট্রাকের কোনো সম্পর্ক নেই,রাশেদ ট্রাক থেকে নেমে আসেনি? দোয়েলের ডানা ভাঙ্গল কি কররে? একেবারে ভাঙ্গে নি,ভাঙ্গলে একেবারেই উড়তে পারত না; কিন্তু ভেঙ্গে কোথাও।রাশেদের দেখতে ইচ্ছে হলো রাশেদের দেখতে ইচ্ছে হল কোথায় ভেঙ্গেছে দোয়েলের।এদেশে কি পাখির ডানার চিকিৎসা হয়? সে যদি পাখিটিকে নিয়ে হাসপাতালে যায়,কোনো ক্লিনিকে ঢোকে চিকিৎসার জন্যে,তাহলে কেউ কি তাকে মানবিক ভাববে,কেউ কি তাকে পাগল ভাববে না? রাশেদ আবার এগোলো দোয়পলের দিকে,দোয়েল উড়ে উড়ে ঢুকে পড়লো আঠারতলা দালানটির ভেতর।রাশেদও দরোজা খোলা দেখে ভেতরে ঢুকে দেয়েল কোথায় গেলো দেখার চেষ্টা করলো,দেখলো দোয়েল বসে আছে সিড়ির হাতলে।সিড়ির হাতল কি দোয়েলের জন্য উপযুক্ত? ওটা কচি আম গাছের ডাল হলে ভাল হত।রাশেদ দোয়েলের দিকে যেতে দোয়েল উড়ে দোতালায় গিয়ে বসল রাশেদ যতই এগিয়ে যায় দোয়েল ততই উড়ে যায়।হাতলে বসে একটু জিরোয়, বিষণ্ন চোখে তার দিকে তাকায়।দোয়েল ক্লান্ত হয়প পড়েছে, রাশেদ ও কি ক্লান্ত হয়নি? দোয়েলের তবুও ভাঙ্গা ডানা রয়েছে,রাশেদের তাও নেই? দশতালার সিড়িতে এসে রাশেদের পা কংক্রিটের মতো শক্ত হয়ে গেল,সে বসে পড়ল ক্লান্ত মূর্তির মতো।দোয়েলের দিকে তাকাতে গিয়ে রাশেদ দেখলো সামনে পুকুড়,পাড়ে বাশঝাড়,হিজলের সারি; পুকুরের জল তিরতির করে কাপছে।কিছুক্ষণ পর রাশেদ দেখতে পেল দোয়েলটি নেই।সে দোয়েলটিকে কোথাও দেখতে পেল না।রাশেদ উঠতে উঠতে ছাদে গিয়ে পৌছাল, মাথার ওপরে আকাশ কিন্তু কোন দোয়েল নেই।- হুমায়ুন আজাদ
তার দিকে তাকিয়ে আছে দোয়েল, তবে দোয়েলের চোখ অতোটা দূর থেকে রাশেদ দেখতে পাচ্ছে না; এটা যদি তার ছেলেবেলা হতো তাহলে হয়তো দোয়ালের চোখ দেখতে পেতো,ওই চোখে কিসের ছায়া পড়েছে,তাও হয়তো দেখতে পেত।দোয়েল নিশ্চয়ই দেখছে রাশেদকে,এবং দূরে দাড়ানো ট্রাকটিকে।দোয়েল কি বুঝতে পারছে রাশেদের সাথে ট্রাকের কোনো সম্পর্ক নেই,রাশেদ ট্রাক থেকে নেমে আসেনি? দোয়েলের ডানা ভাঙ্গল কি কররে? একেবারে ভাঙ্গে নি,ভাঙ্গলে একেবারেই উড়তে পারত না; কিন্তু ভেঙ্গে কোথাও।রাশেদের দেখতে ইচ্ছে হলো রাশেদের দেখতে ইচ্ছে হল কোথায় ভেঙ্গেছে দোয়েলের।এদেশে কি পাখির ডানার চিকিৎসা হয়? সে যদি পাখিটিকে নিয়ে হাসপাতালে যায়,কোনো ক্লিনিকে ঢোকে চিকিৎসার জন্যে,তাহলে কেউ কি তাকে মানবিক ভাববে,কেউ কি তাকে পাগল ভাববে না? রাশেদ আবার এগোলো দোয়পলের দিকে,দোয়েল উড়ে উড়ে ঢুকে পড়লো আঠারতলা দালানটির ভেতর।রাশেদও দরোজা খোলা দেখে ভেতরে ঢুকে দেয়েল কোথায় গেলো দেখার চেষ্টা করলো,দেখলো দোয়েল বসে আছে সিড়ির হাতলে।সিড়ির হাতল কি দোয়েলের জন্য উপযুক্ত? ওটা কচি আম গাছের ডাল হলে ভাল হত।রাশেদ দোয়েলের দিকে যেতে দোয়েল উড়ে দোতালায় গিয়ে বসল রাশেদ যতই এগিয়ে যায় দোয়েল ততই উড়ে যায়।হাতলে বসে একটু জিরোয়, বিষণ্ন চোখে তার দিকে তাকায়।দোয়েল ক্লান্ত হয়প পড়েছে, রাশেদ ও কি ক্লান্ত হয়নি? দোয়েলের তবুও ভাঙ্গা ডানা রয়েছে,রাশেদের তাও নেই? দশতালার সিড়িতে এসে রাশেদের পা কংক্রিটের মতো শক্ত হয়ে গেল,সে বসে পড়ল ক্লান্ত মূর্তির মতো।দোয়েলের দিকে তাকাতে গিয়ে রাশেদ দেখলো সামনে পুকুড়,পাড়ে বাশঝাড়,হিজলের সারি; পুকুরের জল তিরতির করে কাপছে।কিছুক্ষণ পর রাশেদ দেখতে পেল দোয়েলটি নেই।সে দোয়েলটিকে কোথাও দেখতে পেল না।রাশেদ উঠতে উঠতে ছাদে গিয়ে পৌছাল, মাথার ওপরে আকাশ কিন্তু কোন দোয়েল নেই।- হুমায়ুন আজাদ

Post a Comment