Home
/
আর্টস
/
খবর
/
খেলা
/
পরিবেশ
/
প্রবাস
/
মতামত
/
সমগ্র বাংলাদেশ
/
হ্যালো
/
ঘূর্ণিঝড়ের সময় করণীয়
ঘূর্ণিঝড়ের সময় করণীয়
ঘূর্ণিঝড় এলাকা থেকে দূরে থাকলেও সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে নিতে হয় নানান সাবধানতা।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সাধারণ জনগনের করণীয় নিয়ে আলাপ হয় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)’য়ের প্রধান কার্যালয়ের ‘অপারেশন’ বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ নূর ইসলাম খানের সঙ্গে।
তিনি বলেন, “দেশের ১৯টি উপকুলীয় এলাকায় ৫৫,৫৬০ জন সেচ্ছাসেবক প্রস্তুত আছেন। একজন দলনেতার অধীনে প্রতি দুই হাজার মানুষের জন্য রয়েছে ১৫ জনের সেচ্ছাসেবক দল, তারমধ্যে ১০জন পুরুষ আর ৫ জন নারী। প্রতিটি দল পাঁচ ভাগে ভাগ হয়ে সংকেত দেওয়া, উদ্ধার, ত্রাণ বিতরণ, পুনর্বাসন বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত থাকবেন।”
বিগত তিন দিন থেকে সেচ্ছাসেবকরা সংকেত দেওয়া এবং সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে মোতায়েন আছে। এক পতাকায় ৪ নম্বর বিপদ সংকেত, দুই পতাকায় ৫, ৬, ৭ নম্বর বিপদ সংকেত আর তিন পতাকায় ৮, ৯, ১০ বিপদ সংকেত বোঝানো হয়।
৮ নম্বর বিপদ সংকেত আসলেই সাইরেন বাজিয়ে কিংবা স্থানীয় স্কুল, মসজিদ ইত্যাদির মাইক ব্যবহার করে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান জানানো হবে।
এই অবস্থায় সঙ্গে রাখতে হবে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, পরিচয় পত্র, রেডিও, শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি, দিয়াশলাই, টর্চ লাইট, মোমবাতি ইত্যাদি অতি প্রয়োজনীয় অনুসঙ্গ।
প্রয়োজনীয় অনুসঙ্গগুলো কীভাবে সংরক্ষণ করতে হবে সে ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় তথ্য দেবে সেচ্ছাসেবকরা।
বিপদ সংকেত ৮ বা তার বেশি হলে উপকূলীয় দ্বীপ কিংবা অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করবে সেচ্ছাসেবকরা। সরকারী বিধি মোতাবেক এমতাবস্থায় বল প্রয়োগের অনুমতিও আছে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের।
মোহাম্মদ নূর ইসলাম খান বলেন, “ঘূর্ণিঝড় যদি জলভূমির উপর দিয়ে অগ্রসর হয় তবে তা অনেক বেশি শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ পায়, তাই ভয়াবহ দুর্যোগের আশঙ্কা থাকে। তবে স্থলভূমির উপর দিয়ে গেলে ঘূর্ণিঝড় শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ পায় কম।”
শহরের জন্য সাবধানতা
রাজধানীসহ বিভিন্ন শহর অঞ্চলে বেশিরভাগ মানুষ পাকা বাড়িতেই বসবাস করেন তাই বাসস্থানের দিক থেকে সিংহভাগই নিরাপদ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, রাজধানীতে ভারি বর্ষণ, ঝড় হাওয়া, বজ্রপাত ইত্যাদি হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ শহরে বেশিমাত্রায় না পড়লেও সাবধান থাকতে হবে ঘরের বাইরে চলাফেরায়। ভারী বর্ষণের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা এবং তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য সচেতন থাকতে হবে।
প্রচুর বজ্রপাতের আশঙ্কা আছে, তাই গৃহস্থালী বৈদ্যুতিক আসবাব ব্যবহারে সাবধান হতে হবে, সম্ভব হলে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হবে।
বাইরের চলাফেরার সময় বৈদ্যুতিক খাম্বা ও তার থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এছাড়াও ঝড় বাতাসে উপড়ে যাওয়া গাছ, বৈদ্যুতিক খাম্বা এবং বাতাসে উড়ে আসতে পারে এমন যে কোনো বস্তুর ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
নিতান্তই নিরুপায় না হলে সব অঞ্চলের মানুষের উচিত হবে নিজ নিজ নিরাপদ বাসস্থানে অবস্থান করা।
ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা আশঙ্কাজনক মাত্রায় পৌছালে দূর্যোগ কবলিত মানুষদের জন্য ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে জার্মান রেড ক্রস, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং বাংলাদেশ সরকারের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)।
আরও কিছু সাবধানতা
ঘূর্ণিঝড়ের আগে করণীয়
* সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেখে আতঙ্কিত না হওয়া।
* যেকোনো পেইজে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে পোস্ট দেখে আতঙ্কিত না হয়ে টিভি অথবা এফএম রেডিও এর খবর শুনুন। বিপদে শান্ত থেকে সমাধানের চেষ্টা করাই আসল কাজ।
* চার্জ দেওয়া: পাওয়ার ব্যাংক, চার্জার লাইট, টর্চ লাইট এ চার্জ ফুল রাখুন। এর আগে ঘূর্ণিঝড় আইলার জন্য এক দিনের বেশি বিদ্যুৎ, গ্যাস, মোবাইল ফোনের সেবা পাওয়া যায়নি।
ঢাকায় আছি বলে কিছু হবে না, এমন মনে করা বোকামি। ব্যাকআপ হিসেবে মোমবাতি এবং লাইটার রাখা ভালো। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আগুণ সব সময়ই শেষ পন্থা।
* ফার্স্ট এইড বক্স: প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় পানিবাহিত রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে। ডায়রিয়া, জ্বর এর জন্য স্যালাইন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ সংগ্রহে রাখুন।
* নিরাপদ আশ্রয়: বাসা টিন শেড হলে বা নিচ তলায় হলে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পানিরোধক বাক্সে টেপ এবং পলিথিন পেঁচিয়ে রাখুন। ফ্লোরে মাল্টিপ্লাগ রাখবেন না।
* শুকনো খাবার: নিরাপত্তার জন্য গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, টেলিফোন লাইন বন্ধ থাকতে পারে। রাস্তা বন্ধ থাকতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনা খাবার সংগ্রহে রাখুন।
* রেলিংয়ের ওপর ফুলের টব, কনস্ট্রাকশন এর জিনিস: এই ধরনের জিনিস নিরাপদ স্থানে রাখুন। খোলা জায়গায় কনস্ট্রাকশনের জিনিস রাখবেন না। বাসার পাশে নির্মাণাধীন ভবন থাকলে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন।
ঘূর্ণিঝড় শুরু হলে করণীয়
* রাস্তায় থাকলে শপিং মল, মসজিদ, স্কুল বা যেকোনো বিল্ডিং এ আশ্রয় নিন। কোনোভাবেই খোলা আকাশের নিচে থাকা যাবে না।
* এই সপ্তাহে জ্যামে পড়লে গাড়ির পাশে জায়গা রেখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন যেন বিপদের মুহূর্তে দরজা খোলা যায়।
* বিল্ডিংয়ে বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের মেইন লাইন অফ করে দিন।
* দরজা জানালা বন্ধ রাখুন যাতে বাইরে থেকে ময়লা বা ভারী কিছু উড়ে এসে আঘাত করতে না পারে।
* টিনশেড বাসা বা নিচু জায়গায় হলে যদি নিরাপদ মনে না হয়, নিরাপদ কোথাও আশ্রয় নিন।
* ফোনে রেডিও শুনতে হবে। ডেটা কানেকশন চালু রেখে ফেইসবুক স্ক্রল করলে ব্যাটারিও দ্রুত শেষ হবে, নেটওয়ার্কও বেশি ব্যস্ত থাকবে।
* কোনো ভাবেই ট্যাপের পানি সরাসরি খাওয়া যাবে না। ফুটিয়ে বা ভালো ফিল্টার ব্যবহার করতে হবে।
* খুব বেশি জরুরি না হলে রাস্তায় বের হওয়া যাবে না। ইলেকট্রিক শক খাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।
* ফোনে কথা বলে নেটওয়ার্ক ব্যস্ত না রেখে এসএমএস ব্যবহার করে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করুন।
Post a Comment